,

বানিয়াচংয়ের হাওরে কৃষকের স্বপ্ন কেটে সাবাড় করছে ইঁদুর

মোঃ নজরুল ইসলাম তালুকদার, বানিয়াচং : বানিয়াচং উপজেলা জুড়েফ সলি মাঠ যেন সবুজের নকশিকাঁথা। নয়নাভিরাম বোরো ধানগাছে আন্দোলিত হচ্ছে কৃষকের হৃদয়। সেচ ও সারের দাম বাড়ায় উৎপাদন খরচ বাড়লেও বুকভরা আশা নিয়ে কৃষকেরা ধানের ভালো ফলনের স্বপ্ন দেখছেন। তবে সেই স্বপ্নে হানা দিয়েছে ইঁদুর। এতে বিপাকে পড়েছেন অনেক কৃষক।
এ বিষয়ে স্থানীয় কৃষকেরা বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে ধানগাছ ইঁদুর কেটে নষ্ট করে দিচ্ছে। ইঁদুর নিধনে বিভিন্ন ফাঁদ পাতলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। কিছু ধানগাছ ভালো গজিয়েছে। এমন সময় গাছগুলো ইঁদুরে কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে। এতে ফসল ঘরে তোলা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে বানিয়াচং উপজেলায় ৩৭ হাজার ৪৯০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে। উচ্চফলনশীল (উফশি) ও হাইব্রিড জাতের চারা রোপণ করা হয়েছে। এদিকে বোরো আবাদ বাড়াতে সরকারিভাবে কৃষকদের বীজ ও সার দিয়ে সহায়তা করা হয়েছে।
সরেজমিন উপজেলার কাগাপাশা ইউনিয়নের বিভিন্ন হাওরে গিয়ে ইঁদুরে কাটা ধানগাছগুলো মনে হচ্ছে কেউ যেন ধারালো কাঁচি দিয়ে কেটে দিয়েছে। ইঁদুর নিধনেও হিমশিম খাচ্ছেন কৃষক। ইঁদুর নিধনে ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি কেউ কেউ সনাতন পদ্ধতিতে বাঁশ ও কাঠের তৈরি ইঁদুর মারার ফাঁদ ব্যবহার করছেন। আবার অনেকে ইঁদুর তাড়াতে খেতে নিষিদ্ধ পলিথিনও টাঙিয়ে রাখছেন।
এ বিষয়ে কাগাপাশা ইউনিয়নের ধনপুর গ্রামের কৃষক মোঃ ইজাজুল ইসলাম তালুকদার জানান, ‘জলাবদ্ধতার কারণে বোরো ধান আবাদ করতে বিলম্ব হয়েছে। শ্রমিকের বাড়তি খরচে বহন করে বোরো আবাদ করেছিলাম। কিন্তু এখন বোরো ধানগাছও ইঁদুর কেটে ফেলছে। ইঁদুরের উৎপাতে এখন আমার মাথা কাজ করছে না। ইঁদুর যেভাবে উৎপাত শুরু করেছে, তাতে শেষ পর্যন্ত ধান ঘরে তোলা কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে।
কাগাপাশা ইউনিয়নের দায়িত্ব প্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ নোমান জানান, প্রতিদিনই আমরা কৃষকদের নিয়ে পরামর্শ সভা করে চলতি বোরো মৌসুমে ধানগাছ ইঁদুর কেটে নষ্ট করে দিচ্ছে। ইঁদুর নিধনে বিভিন্ন ফাঁদ পাতানো বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে কৃষকদের। তবে একপ্রকার বাধ্য হয়ে পলিথিন টাঙিয়ে দিয়েছি। বাতাসে কাগজ উড়লে শব্দ হয়, সেই শব্দ শুনে ইঁদুর পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে বলে তিনি প্রতিবেদককে জানান।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ এনামুল হক দৈনিক হবিগঞ্জের সময়কে বলেন, ‘প্রতিটি ইউনিয়নে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা রয়েছেন। তাঁরা প্রতিদিন মাঠে গিয়ে কৃষকদের ইঁদুর মারার পদ্ধতি দেখিয়ে দিচ্ছেন। ধানগাছ রক্ষা করতে জমির চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। তিনি আরও জানান প্রতি বছরের বোরো মৌসুমে নবেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে সরকার।


     এই বিভাগের আরো খবর